বাংলাদেশের খুলনা জেলার ডুমুরিয়া উপজেলার ১নং ধামালিয়া ইউনিয়নের ধামালিয়া গ্রামের সরদার বাড়ি যশোর-খুলনা এলাকায় একটি খ্যাতিমান বাড়ি। এই বাড়িটি বৃটিশ-ভারতের পূর্ব থেকেই বিশেষ মর্যাদা বহন করে আসছে। এলাকার মানুষ শ্রদ্ধার সংগে এই বাড়ির কথা স্মরণ করে। স্থানীয়রা সরদার বাড়ির নাম বলতে গিয়ে বলে থাকে ধামালিয়া জমিদার বাড়ি। আজও পুরাতন ও জরাজীর্ণ দ্বিতল ভবনটি সাক্ষ্য দেয় এক সময় জাঁকজমকতায় মুখরিত ছিল বাড়িটি। মসজিদের গাঁয়ের লিপি থেকে ধরে (স্থাপিত – ১৭১৭ খৃঃ) অষ্টাদশ শতকে গোড়ার দিক থেকে বিংশ শতাব্দীর মাঝামাঝি পর্যন্ত প্রায় আড়াই’শ বছর তাদের জমিদারি টিকে ছিল। ধারণা করা যায় মসজিদটি আরও পরে স্থাপিত হয়েছে। বিষয়টি আরও গবেষণার দাবি রাখে।
মসজিদের দক্ষিণপাশের মসজিদ সংলগ্ন প্রায় বিঘা খানেক জমির উপর প্রাচীর ঘেরা জমিদারদের পারিবারিক কবরস্থান। এখানে জমিদারদের কবর আছে কিন্তু পাঁকা করা হয়নি। এমনকি জমিদার আহাদ আলী সরদারের কবরও সুনির্দিষ্ট করে তার বংশধরদের পক্ষেও বলা সম্ভব হয়নি। তাঁর মৃত্যুর সময়টাও জানা যায়নি। তবে আহাদ আলী সরদারের জ্যেষ্ঠ পুত্র মুন্সি মোবারক আলী সরদার ইন্তেকাল করেন ১৯৫০ সালে। তার কবরের স্থানটি চারটি জমানো পিলার চার কোনায় গেড়ে চিহ্নিত করে রাখা হয়েছে। মুন্সি মোবারক সরদারের পুত্র মজিদুল ইসলাম সরদারের (বুলু ও বাকার ভাই এর পিতা) কবর আমেরিকার নিউ জার্সিতে। তিনি ইন্তেকাল করেন ১২ জুলাই ১৯৯১ সালে। মসজিদের ঠিক দক্ষিণ-পশ্চিম কোনে দুইটি কবরের জায়গা পাঁকা করে রাখা আছে। খোঁজ নিতেই বুলু ভাই জানালেন, “তিনি পৃথিবীর যে প্রান্তেই ইন্তেকাল করুণ না কেন, তার শেষ ইচ্ছা তিনি পিতৃভূমির ওই নির্দিষ্ট স্থানে চিরদিন থাকতে চান। তাই কবরের স্থানটি নির্ধারণ করে রেখেছেন”। প্রাচীর ঘেরা কবরস্থানের দক্ষিণ-পূর্ব কোনে মণিরামপুরের সাবেক সংসদ সদস্য খান টিপু সুলতানের বাঁধানো পাঁকা কবর। সেখানে লেখা আছে, জন্ম -১৩ ডিসেম্বর ১৯৫০ সাল, মৃত্যু- ১৯ আগষ্ট ২০১৭ খ্রিঃ।
“জমিদার” শব্দের আভিধানিক অর্থ “ভূস্বামী”। যে ভূস্বামীকে খাজনা বা কর দিতে হয়। পারিভাষিক অর্থ হল- দেশের শাসক শ্রেণী তাদের নিয়ন্ত্রণাধীন ভূ-খণ্ডে বসবাসকারী জনগণের উপর আরোপিত কর বা খাজনা, উপঢৌকন ও আনুগত্য আদায়ের জন্য মধ্যেসত্ত্বভোগী একটি শ্রেণী সৃষ্টি করেন; ওই শ্রেণীর উপাধি ‘জমিদার’। জমিদারকে আঞ্চলিক শাসকও বলা হয়ে থাকে। ইতিহাস পর্যালোচনা করলে জানা যায়, অধিকাংশ জমিদার তাদের প্রজাদের উপর নিপীড়ন করেছেন। তারা প্রজাদের সুখ-দুঃখের খোঁজ-খবর রাখতেন না। যে সকল জমিদার প্রজাপালনে মনোযোগী ছিলেন, তারা তাদের প্রজাগণের মনে শ্রদ্ধার পাত্র হয়ে রয়েছেন। এমনই ব্যতিক্রমী জমিদার ছিলেন ধামালিয়া সরদার বাড়ির জমিদারগণ। আমাদের দেশের(বাংলার) জমিদারদের ইতিহাস সম্পর্কে জানতে হলে কিছুটা পিছনে ফিরে যেতে হবে।
ধামালিয়া জমিদারদের ইতিহাস
মুঘল সম্রাট আকবরের শাসনামলে বাংলার শাসনকর্তা ছিলেন আফগান শাসক সোলেমান খাঁ কররানী। তিনি দিল্লীর সম্রাট আকবরকে যৎ সামান্য কর ও উপঢৌকন দিয়ে আনুগত্য স্বীকার করে নির্বিঘ্নে রাজ্য শাসন করতেন। সোলেমান খাঁ কররানীর মৃত্যুর পর তার পুত্র দাউদ খাঁ কররানী বাংলার শাসনভার গ্রহণ করেন। তিনি ছিলেন অদূরদর্শী শাসক। মুঘলদের সামরিক শক্তি সম্পর্কে পরিপূর্ণ ধারনা তার ছিল না। সম্রাট আকবর যখন গুজরাট অধিকারের জন্য যুদ্ধ অভিযান করছিলেন, ঠিক তখনই দাউদ খাঁ কররানী আকস্মিক মুঘলদের পূর্বাঞ্চলিয় যামানিয়া দূর্গ আক্রমণ করে দখল করেন এবং মুঘল কর্তৃত্ব অস্বীকার করে নিজেকে স্বাধীন শাসক হিসেবে ঘোষণা করেন। এই সংবাদ দ্রুত সম্রাট আকবরের কানে পৌঁছালে সম্রাট আকবর ক্রুব্ধ হন। গুজরাট জয়ের পর সম্রাট আকবর বাংলা আক্রমণের সিদ্ধান্ত নেন এবং দাউদ খাঁ কররানীর বিরুদ্ধে সৈন্য প্রেরণ করেন। কয়েকস্থানে খন্ড যুদ্ধের পর রাজমহলের যুদ্ধে দাউদ খাঁ কররানী পরাজিত ও নিহত হন। বাংলা মুঘলদের শাসনাধীনে চলে আসে। এরপরও বাংলার বার ভূঁইয়ারা দীর্ঘদিন প্রায় স্বাধীনভাবে জমিদারী পরিচালনা করেও একে একে মুঘল বশ্যতা স্বীকার করতে বাধ্য হন। তৎকালীন সময়ে বাংলায় ছোট-বড় অনেক জমিদার শ্রেণী গড়ে উঠে। ওই সকল জমিদারেরা অঞ্চল ভিত্তিতে পত্তনী নিত। সৃষ্টি হয় ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র জমিদার, গাতীদার শ্রেণীর। যারা কর-খাজনার বিনিময়ে স্ব-স্ব এলাকায় কর্তৃত্ব প্রতিষ্ঠা করতেন।
১৭০০ সালে মুর্শিদ কুলি খাঁ বাংলার প্রথম দেওয়ান নিযুক্ত হয়ে আসেন। পরে ১৭১৩ খৃষ্টাব্দে মুর্শিদ কুলি খাঁ বাংলার নায়েব সুবেদার নিযুক্ত হন। তিনি ছিলেন আদর্শবান সম্রাট আওরঙ্গজেবের ভাবাদর্শের মানুষ। দীর্ঘদিন রাজস্ব বিভাগের গুরুদায়িত্ব সততা ও নিষ্ঠার সাথে পালন করে তিনি বিশেষ পারদর্শিতা অর্জন করেন। ১৭১৪ সালে ভূষনার জমিদার সীতারাম স্বাধীনভাবে জমিদারী পরিচালনার চেষ্টা করেন। মুর্শিদ কুলি খাঁ তাকে পরাজিত ও নিহত করেন। ধারনা করা হয়, তার সময় পূর্ব বাংলার অনেক জমিদারের জমিদারীর গোড়াপত্তন হয়। নবাবের প্রিয়ভাজন রঘুনন্দন নাটোর অঞ্চলের জমিদারী লাভ করেন। ভূষনার জমিদারীর অনেকাংশই লাভ করেন রামজীবন। একইভাবে দক্ষিণবঙ্গেও অনেক হিন্দু জমিদার জমিদারী লাভ করেন। পরে ইংরেজ শাসনামল পর্যন্ত তাদের জমিদারী কাল প্রলম্বিত হয়। জানা যায়, পাঁজিয়ার জমিদার দেওয়ান রুক্নিনী কান্ত বসু ও রাজা পরশনাথ বসু নবাব মুর্শিদ কুলি খাঁর দেওয়ান ছিলেন। বিভিন্ন তথ্য থেকে ধারনা করা যায়- ধামালিয়ার জমিদারদের জমিদারীও প্রায় সমসাময়িক। একটি তথ্য থেকে জানা যায়, ধামালিয়া জমিদারদের জমিদারির সময়কাল অষ্টাদশ শতকের প্রথমার্ধ থেকে বিংশ শতকের প্রায় মাঝামাঝি পর্যন্ত। ডুমুরিয়ার ইতিহাস গ্রন্থের তথ্যমতে ‘ নয় পুরুষের প্রতিষ্ঠিত এই বংশের প্রথম পুরুষ বাবর সরদার। পরবর্তী বংশধরেরা হলেন- ওসমান, বাহাদুর ও চিকন মাহামুদ। প্রাপ্ত তথ্যে এদের নাম থাকলেও তাদের কর্মকাণ্ডের কোন পরিচয় পাওয়া যায় না। যতদূর জানা যায়, মুন্সী ভিকন আলী সরদার জমিদার হিসেবে প্রথম জমিদারীর গোড়াপত্তন করেন। অপর একটি সূত্র অনুসারে পাঁজিয়ার দেওয়ান রুক্নিনী কান্ত বসুর কাছ থেকে মুন্সি ভিকন আলী সরদার জমিদারীর পত্তনী কেনেন। দেওয়ান রুক্নিনী কান্ত বসু চেঙ্গুটিয়া স্টেটের জমিদার ছিলেন। এছাড়া কলিকাতার জিতেন সেনের কাজ থেকে মুন্সি ভিকন আলী সরদার আরও একটা পত্তনী কেনেন। সরদারদের জমিদারি ছিল-ধামালিয়া, বরুনা, কৃষ্ণনগর, রঘুনাথপুর, দেড়ুলি, মৌখালি ও বিল খুকশিয়ার অংশবিশেষ।
মুন্সি ভিকন আলীর পুত্র আহাদ আলী সরদারের সময় তাদের জমিদারীর প্রভাব-প্রতিপত্তির কথা চারিদিকে ছড়িয়ে পড়ে। এলাকায় কিংবদন্তী আছে, ধামালিয়ার সরদারদের চারো বা গুন্সি’তে (মাছ ধরার যন্ত্র বিশেষ) টাকা বাঁধতো। অনুসন্ধানে জানা যায়, মুন্সী ভিকন আলী সরদার ও তাঁর পুত্র আহাদ আলী সরদার জমিদারীর পাশাপাশি ব্যাবসা-বাণিজ্য করে প্রচুর অর্থবিত্তের অধিকারী হন।
তাদের আট-দশ খানা বড় ব্যবসায়িক পদী নৌকা ছিল। নদী পথে সুন্দরবনের সুন্দরী, শাল, সেগুন, গেওয়া, গরান, গোলপাতা ও মধুসহ সুন্দরবনের আরোহিত সম্পদ কলকাতায় নিয়ে বিক্রি করতেন। বরুনা বাজার হতে হরিহর ও কপোতাক্ষ নদের মাধ্যমে ঝিকরগাছা পথে এগুলো চলাচল করতো। নদীপথে আসা-যাওয়ার মাধ্যমে বিভিন্ন বাজারের সাথে ব্যবসায়িক সম্পর্ক ছিল। নৌ- ব্যবসার মাধ্যমে তাঁরা প্রচুর লাভবান হতেন। এছাড়া কলকাতায় তাদের ইটের ভাটা ও ঠিকাদারী ব্যবসা জমজমাট ছিল। কলকাতার নারিকেল ডাঙ্গায় ৩০ বিঘা জমির উপর প্রতিষ্ঠিত ‘মুন্সীবাজার’ সরদারদের প্রতিষ্ঠিত ও নিজস্ব সম্পত্তি। এখানে তাদের বিভিন্ন ধরণের ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ছিল। ওই সকল ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে তাদের এত বিপুল পরিমাণ অর্থের আগমন ঘটতো যে কারণে সাধারণ মানুষ মনে করতেন- “ধামালিয়ার জমিদাররা চারো পাতলেও টাকা বাঁধে”। আসলে কথাটা কিংবদন্তী। কালক্রমে এটা প্রবাদ বাক্য হয়ে যায়। আহাদ সরদার একাধিক বার গুপ্তধন পেয়েছেন বলে এলাকায় এখনও জনশ্রুতি আছে। ফলে অন্যান্য জমিদারদের ন্যায় তাঁর জমিদারি থেকে জোর-জুলুম বা প্রজা পীড়নের অভিযোগ শোনা যায় না। বরং ধামালিয়া জমিদারদের এলাকায় জনকল্যাণমূলক কাজের কথা জানা যায়। পাশাপাশি পুরাতন ভবণের উত্তর পাশে দুটি হাজত ঘর এখনও বিদ্যমান। যেটা অবাধ্য প্রজাদের শাস্তির ব্যবস্থা বলে ধারণা করা যায়।
ধামালিয়া জমিদারদের জনকল্যানমূলক কাজ ছিল প্রশংসনীয়। এই কাজের মধ্যে জনসাধারণের চলাচলের জন্য রাস্তা-ঘাট নির্মাণ, যার মধ্যে ভোলাপোতা রাস্তাটি উল্লেখযোগ্য। বর্তমানে এই রাস্তাটি ফুলতলা ও অভয়নগর উপজেলার মধ্যে গুরুত্বপূর্ণ সংযোগ সড়ক। পানীয় জলের কষ্ট নিবারনের জন্য তাঁরা পুকুর-দিঘী খনন করেন। ডুমুরিয়া উপজেলার পাকুড়িয়াতে ৩ একর জমির উপর বিরাট দিঘী খননসহ বিভিন্ন স্থানে পুকুর খনন করেন। লেখাপড়া শেখার জন্য মক্তব ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠান স্থাপনে সহায়তা প্রদান করেন। এর মধ্যে রঘুনাথপুর ও রুদাঘরা মিকশিমিল হাইস্কুল অন্যতম। জমিদাররা ধর্মীয় শিক্ষার প্রসারের জন্য পৃষ্ঠপোষকতা দান করতেন। মসজিদের সংগে মক্তব বিদ্যমান ছিল। মক্তবে আরবি ও ফার্সি শেখানোর ব্যবস্থা ছিল। বাড়িতে দলিজ ঘর (বৈঠক খানা) ছিল। সেখানে অতিথিদের আপ্যায়নের ব্যবস্থা ছিল। এছাড়া শুক্রবার জুম্মা নামাজের পর দূর-দুরান্ত থেকে আসা মুসল্লিদের দুপুরের খাবার ব্যবস্থা করা হতো। এমন কথাও শোনা যায়, কখনও কখনও শুক্রবারে দুর-দুরান্ত থেকে আগত মুসল্লিদের খাসি জবাই করেও খাওয়ানো হতো। জমিদার বাড়িতে ইসলামি পরিবেশ বিরাজিত ছিল।
জমিদারবাড়ির বর্ণনা
ধামালিয়া মূল জমিদার বাড়িটি দুটি অংশে বিভক্ত। প্রথম অংশটি দক্ষিণ দূয়ারি, ছয় কক্ষ বিশিষ্ট দ্বিতল ভবন। পিছনের অংশ দিয়ে সিড়ি দ্বিতলে উঠে গেছে । দ্বিতল ভবনের ছাঁদে যাওয়ার জন্য কোন সিঁড়ি ছিল না। এই দ্বিতল ভবনের পূর্ব পাশের ঘরে একটা নক্সাকরা পালঙ্ক ও একটি কাঠের সিন্দুক আজও পড়ে আছে। বাকী অংশটা ভগ্নপ্রায়। দ্বিতল ভবনের ছাঁদবিহীন খিলানের ভগ্ন দেওয়ালগুলি বাড়িটির পূর্বের গৌরবময় দিনের কথা দর্শনার্থীদের স্মরণ করিয়ে দিচ্ছে।
দ্বিতল ভবনের নিচ তলায় উত্তরপাশ সংলগ্ন আরও অনেকগুলি ঘরের অবয়ব লক্ষ্য করা যায়। এর মধ্যে দুইটি হাজত ঘর, রন্ধন শালা, হল ঘর, মালামাল সংরক্ষণ ঘর, পালকি ঘর ও কর্মচারিদের থাকার ঘর। ভগ্ন ভবনের পূর্ব পাশের খোলা আঙ্গিনা রয়েছে। জমিদার বংশের লোকেরা দ্বিতলে বসবাস করতো। পারিবারিক লোকসংখ্যা বেশী হওয়ার কারণে পশ্চিম পাশের দ্বিতীয় ভবনটি করা হয়। জমিদার আহাদ আলী সরদার এই ভবনের প্রতিষ্ঠাতা। এই ভবনটি পূর্ব ও দক্ষিণ দূয়ারি। ভবনটি সংস্কার করে মুন্সি মোবারক আলী সরদারের বংশধররা এখানে বসবাস করেন। এই বংশের কৃতি সন্তান ডঃ শামসুল করিম বাকার, মোঃ মাশরুখ হাসান, মোঃ মনিরুল ইসলাম ও বাশারুজ্জামান (পিতাঃ মাজিদুল ইসলাম সরদার) বর্তমানে আমেরিকা প্রবাসি। সেখানে তারা সফল শিল্পপতি হিসেবে নিজেদের প্রতিষ্ঠিত করেছেন। তারাও মাঝে মাঝে দেশে আসেন এবং তাদের পূর্বপুরুষের ঐতিহ্য অনুযায়ী এলাকায় তাদের অবদান রেখে চলেছেন। দেশে এসে পশ্চিম পাশের ভবনেই অবস্থান করেন।
দেশের সকল জমিদারগণ তাদের ঐতিহ্য প্রকাশের জন্য জমিদার বাড়ি সংলগ্ন বা অনতি দূরে মসজিদ বা মন্দির প্রতিষ্ঠা করতেন। ধামালিয়া জমিদারও তাদের বাড়ি সংলগ্ন তিন গম্বুজবিশিষ্ট একতলা মসজিদ প্রতিষ্ঠা করেন। মসজিদটি মুঘল স্থাপত্যের অনুকরণে নির্মিত ছিল। মসজিদের গায়ে খোদাই করা স্থাপিত- ১৭১৭ খৃঃ, পুনঃনির্মাণ ২০০৫ খৃঃ। পুনঃনির্মাণের সময় মসজিদটি দ্বিতলে সম্প্রসারিত করা হয়। বর্তমানে দুই ভবনের সাথে মসজিদের উত্তর দেওয়ালটি মিশে আছে। পূর্বে এমনটি ছিল না। পূর্ব পাশের দ্বিতল ভবন ও মসজিদের মাঝে সামান্য ফাঁক ছিল। যে পথ দিয়ে একজন মানুষ চলাচল করতে পারতো। পুনঃনির্মানের সময় উত্তর দিকে কিছুটা সম্প্রসারিত হয়ে আবাসিক ভবনের সাথে প্রায় মিশে যায়। মসজিদের বর্ধিত অংশে পূর্বে মহিলারা নামাজ পড়লেও বর্তমানে পড়েনা। ওই অংশে এখন কুরআন শিক্ষা ও তালিমের কাজটি করা হয়ে থাকে।
জমিদার বাড়ির উত্তর-পশ্চিম পাশের, পূর্ব-পশ্চিম লম্বা ও উভয় পাশের বিরাট সান বাঁধানো ঘাটের গভীরতম বড় একটা পুকুর আছে। ওই পুকুরের তলা বাদে চার পাশ ইট দিয়ে বাঁধানো। যা এখনও দৃশ্যমান। পুকরটি নিয়েও কিংবদন্তী আছে। অনেকে ভয়ে এই পুকুরে গোসল করতো না। গভীর পুকুর খননের পরও পুকুরে পানি না উঠায় নদীর সংগে সংযোগ করা হয়। যতদূর জানা যায়, পুকুরের পূর্ব ঘাট মেয়ে ও বাচ্চা ছেলে-মেয়েরা এবং পশ্চিম ঘাট পুরুষরা ব্যবহার করতো। ২০০২ সালে পুকুরের পাড়ে লিটন ফ্লাওয়ার কিণ্ডার গার্ডেন ও শিশুপার্ক প্রতিষ্ঠিত হয়েছে।
জমিদারদের কাছারী ঘর ও বিচারালয় ছিল জমিদার বাড়ি থেকে প্রায় এক কিলোমিটার দুরে বরুনা বাজারে। সেখান থেকে জমিদাররা তাদের জমিদারী পরিচালনা করতেন। বিচারের জন্য বিচার কার্যালয় ছিল। ১৮৮২ সাল পর্যন্ত এখানে শরিয়তি আইনে বিচার ব্যবস্থা টিকে ছিল। এছাড়া জমিদারদের ব্যবসা-বাণিজ্যও এখান থেকে পরিচালিত হতো। বরুনা বাজারে নৌবন্দর ছিল। জমিদারদের দ্বি-তল কাছারি ঘর ছিল।
মুন্সি মোবারক আলী সরদারের তিনজন স্ত্রী ছিলেন। জমিদারবাড়ির তথ্য প্রদানকারী মোঃ মাশরুখ হাসান সরদারের (বুলুভাই) দাদা মোবারক আলী সরদারের দ্বিতীয় স্ত্রী তার আপন দাদী। তিনি ছিলেন নন-বেঙ্গলি, বিহারী। বুলুভাই প্রদত্ত তথ্যসমূহ তার নিজের দাদী ও ছোট দাদীর মুখ থেকে শোনা এবং তার নিজের চোখে দেখা।
মুন্সি মোবারক আলী সরদারের সময় উষারাণী নামে এক পরমা সুন্দরী মহিলাকে কলিকাতা থেকে এনে কাছারী ঘরের দ্বিতলে রাখেন। উষারাণী কলিকাতার জনৈক ব্যারিস্টারের স্ত্রী। তার দুটি ছেলে সন্তানও ছিল। মামলা-মকদ্দমার সূত্রে মোবারক আলী সরদারের সাথে ব্যারিস্টারের পরিচয় ঘটে। পরে ব্যারিস্টারের সাথে সুসম্পর্কের মধ্যে দিয়ে তার স্ত্রীর সাথে মোবারক আলীর ঘনিষ্ঠতা হয়। মোবারক আলী ও উষারাণীর ঘনিষ্ঠতা এমনই এক পর্যায় পৌঁছায় যে; উষারাণী স্বামী, সন্তান ও সংসারের মায়া ত্যাগ করে অতি সংগোপনে মোবারক আলীর লোকজনের সঙ্গে ধামালিয়ায় চলে আসেন। ধামালিয়া জমিদার বাড়ীতে ইসলামি মূল্যবোধের কারণে মোবারক আলী উষারাণীকে বাড়িতে তুলতে সাহস করেননি। উষারাণীকে কাছারি ঘরের দ্বিতীয় তলায় থাকার ব্যবস্থা করেন। উষারাণীকে আরাম-আয়েসে রাখার জন্য মোবারক আলী সরদার অনেক অর্থ ব্যয় করতেন। তার স্নানের জন্য কাছারী পাশে একটি পুকুর খনন করেন এবং পুকুর থেকে দ্বিতল পর্যন্ত সিঁড়ি তৈরী করে দেন। পুকুরটিকে এলাকার লোকে উষারাণীর পুকুর বলতেন।
বর্তমানে পুকুরটি ভরাট করে সেখানে ইউনিয়ন ভূমি অফিস নির্মিত হয়েছে। ধামালিয়া এলাকায় উষারাণীর নামে কবিতা এখনও লোকমুখে শোনা যায়। ডুমুরিয়ার ইতিহাস গ্রন্থে বর্ণিত উষারাণীকে নর্তকী হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে। যা মোবারক আলীর পৌত্র মোঃ মাশরুখ হাসান দৃঢ়তার সাথে প্রত্যাখান করেন। তিনি আরও জানান, তিনি তার ছোট দাদীর মুখেই ঘটনার বিবরণ জেনেছেন। প্রায় ৫/৬ মাস অনুসন্ধানের পর ব্যারিস্টার মহাশয় জানতে পারেন, তার স্ত্রী মোবারক আলী সরদারের তত্ত্বাবধানে আছেন। ব্যারিষ্টার তার স্ত্রীকে ফেরত পাওয়া ও মোবারক আলীকে শাস্তি দেওয়ার জন্য আদালতে মোবারক সরদারের বিরুদ্ধে ফৌজদারী মামলা রজ্জু করেন। দীর্ঘদিন মামলা চলার পর আপস মিমাংসার মাধ্যমে মামলার নিষ্পত্তি হয়। ছয়মাস থেকে এক বছর পর উষারাণীও ধামালিয়া জীবনের ইতি টেনে স্বামীর ঘরে ফিরে যান।
গ্রামে একটা প্রবাদ চালু আছে, জাহাজ চলে যাওয়ার পর নদীর পানি উথাল-পাথাল করে নদীর পাড় ভাংগে। তেমনি উষারাণী চলে যাওয়ার পর ধামালিয়া জমিদার বাড়ীতে যে ধাক্কা লাগে তা কেটে ওঠা কঠিন হয়ে পড়ে। উষারাণীর মামলার কারণে জমিদার মোবারক আলী সরদারের অপূরণীয় অর্থ ক্ষতি হয়। জমিদারীর তদারকিতেও যথেষ্ঠ গাফিলতি হয়। ব্যবসা-বাণিজ্যেও ভাঁটা পড়ে। ফলে অচিরেই মোবারক আলী অর্থকষ্টে নিপতিত হন। জমিদারীর বিভিন্ন তৌজিতে খাজনা বাকী পড়ে। কোথাও কোথাও সম্পত্তি নিলামে উঠে।
১৭৭২ সালে ওয়ারেন্ট হেস্টিংস কোম্পানির আয় বৃদ্ধির জন্য পাঁচশালা বন্দোবস্ত করেন। পরবর্তী সময় এই ব্যবস্থার অনেক ত্রুটি ধরা পড়ে। লর্ড কর্ণওয়ালিস ১৭৯৩ সালের ২২ মার্চ বাংলা, বিহার ও উড়িষ্যায় দশশালা বন্দোবস্তকে চিরস্থায়ী ঘোষণা দিয়ে বাৎসরিক নির্দিষ্ট পরিমাণ খাজনার ভিত্তিতে জমিদারগণকে জমির স্থায়ী মালিক হিসেবে স্বীকৃতি দেন। এরপর বৃটিশ সরকার জমিজমা সংক্রান্ত যশোর গেজেট প্রকাশ করে। ১৯২৫ সালে আহাদ আলী সরদারের ৫৭ তৌজি খরিদ করেন আব্দুল মাহামুদ, পিতা মৃত- মারিফুল হক, ১৫ নং চেতল হাট রোড, কলিকাতা। এই খরিদের ফলে মণিরামপুর ও ডুমুরিয়ার কিছু সম্পত্তি সরদারদের হাতছাড়া হয়ে যায়। ইতিপূর্বে জমিদারীর কিছু অংশ ৪৯ নং তৌজির শ্যামনাথ চ্যাটার্জীর আওতাভুক্ত হয়। তবে কি কারণে শ্যামনাথ চ্যাটার্জীর হস্তগত হয়, তা জানা যায়নি। আর্থিক অনটনের সময় জমিদারী ওয়ারেশদের মধ্যে ভাগাভাগি হয়। ১৯২৭ সালে ধামালিয়া জমিদারদের বিভিন্ন ওয়ারিশের সম্পত্তি নিলামে উঠলে ফুলতলার যুগনিপাশা গ্রামের মোল্যা মোঃ এহিয়া খরিদ করে। পরে ১৯২৯ সালে ওই সম্পত্তি কলকাতার চেতল হাট রোডের সেই আব্দুল মাহামুদই খরিদ করেন।
শ্যামনাথ চ্যাটার্জীর সম্পত্তির অংশে নিয়মিত কর পরিশোধ না করায় নিলামে উঠলে ফুলতলা থানার পয়গ্রাম কসবা গ্রামের কাজীবাড়ির কাজী গোলাম নবী ১৯৩৬ সালে নিলাম খরিদ করেন। এই নিলামের বিরুদ্ধে ১৯৩৭ সালে মোবারেক আলী সরদার ও আব্দুল কাদের সরদার দেওয়ানী মোকদ্দমা দায়ের করেন। এই মোকাদ্দমায় মোবারক আলী সরদার ও আব্দুল কাদের সরদারের বিরুদ্ধে সাব- জজ কোর্ট রায় দেয়। এই রায়ের বিরুদ্ধে মোবারক আলী সরদাররা ১৯৩৮ সালে হাইকোর্টে আপিল করেন। এই সময় উভয় পক্ষ বিরোধের কারণে উক্ত সম্পত্তির খাজনা বাকী পড়ায় আবারও নিলামে ওঠে। এ সময় কাজী গোলাম নবী নিজ নামে খরিদ না করে জনৈক মৌলবি মফিজ উদ্দীনের নামে বেনামে খরিদ করেন। অতঃপর সরদারদিগরের পক্ষে উক্ত নিলাম রদের পক্ষে মিস কেস দায়ের করেন। মিস কেসের ফলে নিলাম রদ হয়ে যায়। নিলাম রদের ফলে কাজী গোলাম নবীর পক্ষ হতে ১৯৩৮ সালে সিভিল রিভিশন আনীত হলে উভয় পক্ষের মধ্যে আপস মিমাংসা হয়। উক্ত ছোলেনামার শর্তানুসারে মোবারক আলী সরদার ও আব্দুল কাদের সরদার ১৮ সেপ্টেম্বর ১৯৪১ সালের মধ্যে খুলনা সাব জজ আদালতে ১৫,০০০ (পনের হাজার) টাকা জমা দিলে নিলাম রদের আদেশ বহাল থাকবে। মামলা-মোকদ্দমা চালাতে গিয়ে মোবারক আলী সরদার ও আব্দুল কাদের সরদারের প্রচুর অর্থ ব্যয় হয়। বাধ্য হয়ে তারা কলিকাতার জিতেন্দ্রনাথ সেনের কাছ থেকে ৫০০০(পাঁচ হাজার) টাকা ধার করেন। সম্মান বাঁচানোর জন্য তারা পুনঃরায় জিতেন্দ্রনাথ সেনের নিকট থেকে আরও ১৫,০০০ (পনের হাজার) টাকা পাওয়ার জন্য নিলাম রদে প্রাপ্ত সম্পত্তি জিতেন্দ্রনাথ সেনের কাছে অগ্রিম বিক্রয়ের প্রস্তাব দিলে তিনি তা গ্রহণ করেন। সরদাররা আদালতের শর্ত মোতাবেক যথা সময়ে খুলনা সাব-জজ আদালতে ১৫,০০০(পনের হাজার) টাকা জমা দেন। একই দিনে জিতেন্দ্রনাথ সেনের নামে উক্ত সম্পত্তি কবলামূলে রেজিষ্ট্রি হয়।
১৯৪৭ সালে বৃট্রিশ ভারত স্বাধীন হয়। জন্ম হয় ভারত ও পাকিস্তান নামে দুটি স্বাধীন রাষ্ট্রের। কলিকাতায় বসবাসকারী জিতেন্দ্রনাথ সেনের পক্ষে পূর্ব পাকিস্তানের অবস্থিত ধামালিয়ার সম্পত্তি দেখাশুনা করা অনেকটা অসম্ভব হয়ে পড়ে। কর-খাজনা বাকী পড়ায় তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তান সরকার ১৯৫০ সালে বাকী রাজস্বের দায়ে ৪৯ নং তৌজি খাস করে নিলামে বিক্রির জন্য নোটিশ জারি করে। এই নিলামের বিরুদ্ধে সরদার বংশের কন্যা আঞ্জুমান আরা খাতুন ও তার স্বামী আব্দুল হামিদ খান নিলাম রদের জন্য আদালতে মামলা করলে ১৯৫৩ সালে নিলাম রদ হয়। আব্দুল হামিদ খান তার স্ত্রীর নামে উক্ত সম্পত্তি খরিদ করে সরদারদের ফেরত দেন। উল্লেখ্য ওই সময় ধামালিয়া জমিদারীর হাল ধরার মতো তেমন কেউ ছিল না। ১৯৫২ সালে পূর্ব পাকিস্তান সরকার জমিদারী প্রথা বাতিল করলে সরকারের সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে আদালতে জমিদারদের মামলা চলতে থাকে। ১৯৫৫ সালের ডিসেম্বর মাসে মামলার চুড়ান্ত নিষ্পত্তি হয়। স্থায়ীভাবে বন্ধ হয়ে যায় জমিদার ও গাতীদারদের খাজনা আদায়ের ক্ষমতা। এরপরও কোন কোন জমিদার বা গাতীদাররা ১৯৫৮ সাল পর্যন্ত বকেয়া খাজনার নাম করে কিছু খাজনা আদায় করেন। ওই সময় ধামালিয়ায় আঞ্জুমান আরা খাতুনের পক্ষে কিছু কিছু খাজনা আদায় সম্ভব হয়েছিল। পাকিস্তান সরকার তখন থেকে সকল জমির মালিকানা জমি চাষাবাদকারী কৃষকদের মধ্যে প্রদান করে। কৃষকরা জমির মালিকে পরিণত হয়। পাশাপাশি জমিদাররা তাদের বসবাস ও ভরণপোষন জন্য তাদের অধীনস্ত বিভিন্ন খাস জমির ১০০ (একশত) একর পর্যন্ত ভোগ দখলের অধিকার লাভ করে।
জমিদারী বিলুপ্ত হওয়ার পর দেশের সকল জমিদারদের জৌলুস কমে য়ায়। যতটুকু জানা যায়, ধামালিয়া জমিদাররা বড় মাপের জমিদার ছিলেন না। অনেক বড় বড় জমিদারও বিলুপ্ত হয়ে যায়। এরপরও ধামালিয়া জমিদারদের বংশধররা তিনটি শাখায় ভাগ হয়ে এখনও মোটামুটি সুনামের সংগে টিকে আছে। এই বংশের শ্রেষ্ঠ সন্তান ড. শামসুল করিম বাকার ও তার ভায়েরা আমেরিকা প্রবাসি হলেও দেশের টানে মাঝে মধ্যে বাড়িতে আসেন। এলাকার বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে ও জনকল্যাণমূলক কাজে আত্মনিয়োগ করেন। এই প্রচেষ্টা তার পূর্বপুরুষের মুখ উজ্জ্বল করে। তাই আজও এলাকার লোকেরা ধামালিয়া জমিদারদের নাম শ্রদ্ধার সংগে স্মরণ করে।
—- ০ —-
[ বিঃ দ্রঃ ] ধামালিয়ার জমিদারদের সম্পর্কে লিখতে গিয়ে যে সব তথ্য বর্ণিত হলো, তা লোকমুখে শোনা ও প্রাপ্ত তথ্যের উপর ভিত্তি করে লেখা। সকল বিষয়গুলি যাচাই-বাছাই করা সম্ভব হয়নি। যদি কারো নিকট কোন তথ্য অসংগতি মনে হয়; তথ্য প্রমাণের ভিত্তিতে জানালে সংশোধনের চেষ্টা করবো এবং কৃতজ্ঞ থাকবো।
লেখক পরিচিতিঃ
মোঃ রুহুল আমিন
অধ্যক্ষ, পাঁজিয়া ডিগ্রী কলেজ
পাঁজিয়া, কেশবপুর, যশোর, বাংলাদেশ ।
সাংবাদিক ও কলামমিস্ট
মোবাঃ ০১৭১৮-৬১১৫৫০, ই-মেইলঃ ruhulamin0655@gmail.com
তথ্যসূত্রঃ
ক) বাংলাদেশের ইতিহাস – ডঃ মুহম্মদ আবদুর রহিম, ডঃ আবদুল মমিন চৌধুরী, ডঃ এ বি এম মাহমুদ, ডঃ সিরাজুল ইসলাম।
খ) ডুমুরিয়ার ইতিহাস – উপাধ্যক্ষ শেখ আবদুল জলিল।
গ) মোঃ মাশরুখ হাসানের স্মৃতিচারণ (জমিদার মুন্সি মোবারক আলী সরদারের পৌত্র)।
ঘ) এলাকার বয়োবৃদ্ধদের সাক্ষাৎকার।